মাসের খরচের হিসাবের খাতা বের করুন। মাসিক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচ পৃথক করুন।
নিম্নোক্ত ভাবে খাত ওয়ারী চিন্তা করুন এবং দীর্ঘ মেয়াদি খরচ বাঁচান।
পরিবারের সবাইকে সম্পৃক্ত করুন। সুবিধাজনক সময়ে সবার সাথে আলোচনা করুন, কিভাবে পারিবারিক জিনিসপত্র ব্যবহারের সময় যেমন- রান্নার সময়, ধোয়ার সময়, বিনোদনের সময়, ভ্রমণের সময় ইত্যাদি কাজে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচ কমানো সম্ভব।
বুদ্ধিমত্তার সহিত কেনাকাটা করুন। নতুন জিনিস কেনার পূর্বে বিক্রেতা বা বিভিন্ন সোর্স থেকে স্মার্ট ও এনার্জি ইপিশিয়েন্ট ডিবাইস্ সম্পর্কে অবহিত হয়ে ক্রয় করুন।
কোন কোন প্রতিষ্ঠান বিশেষ আইটেমের জন্য ভর্তুকি, কর রিভেট, কিস্তি বা অন্যান্য সুবিধা দিয়ে থাকে। আশপাশের পরিচিত জনদের সাথে পূর্ব আলোচনা করলে সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।
পরিবার থেকেই প্রথম শুরু করতে পারেন:
আপনার বাড়ি কি আধুনিক এনার্জি স্ট্যান্ডার্ড । অর্থাৎ আপনার ঘরের দেয়াল, মেঝে, সিলিং এর আলোর প্রতিফলন, তাপমাত্রা শুষন ও শব্দ দোষণ হ্রাস করন ক্ষমতা এনার্জি সেভিং এর সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত।নতুন বাড়ি করার সময়ই আপনাকে ভবিষ্যতের এনার্জি সেভিং এর বিষয় খেয়াল রেখে ডিজাইন করতে হবে। বিল্ডিং এর অবস্থান, সান শেডিং সিস্টেম, জানালা-দরজা ডিজাইন ও স্থান নির্বাচন, শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে প্রাকৃতিক সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে সত্যিকারের এনার্জি সেভিং করা যেতে পারে।
বর্তমানে যেখানে বাস করছেন সেখানেও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে এনার্জি সেভ করতে পারেন-
- আপনি যদি কেন্দ্রীয় শীততাপ নিয়ন্ত্রণ বা গরম পানি ব্যবস্থা ব্যবহার করে থাকেন তা হলে জেনে রাখা ভাল, ১৯ ডি.সে. তাপমাত্রা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভাল এবং ৬০ ডি.সে. তাপমাত্রা আপনার পানির ট্যান্কির জন্যই যথেষ্ট। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য যদি থার্মোমিটার না থাকে আজই তা লাগিয়ে নিন।
- শীতের সময় বাহিরের তাপমাত্রা কমে গেলে জানালার পর্দা বন্ধ রাখুন। জানালা ও দরজার ফাঁকগুলো বন্ধ করে দিন। গরম পানির পাইপসমুহের তাপ-হ্রাস কমানোর জন্য ইন্সুলেশন করে নিন।
- ভাড়া বা ক্রয়ের সময় বাড়িটি কতটা এনার্জি সেভিং উপযোগী তা বিবেচনা করতে হবে।
আপনার বাড়ির ও এনার্জি সেভিং ডিভাইস সমূহের সর্বোচ্চ সুবিধা গ্রহণ করতে হবে-
- আপনার শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম প্রতি বছর মেইনটেনেন্স ও ইপিসিয়েন্সি পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
- পুরাতন হিটিং সিস্টেম ও বয়লার পরিবর্তন করে অধিক দক্ষতা সম্পন্ন দারা প্রতিস্থাপন করে নিন।
- জানালা পরিবর্তনের সময় কাঁচগুলো তাপ নিরোধক বা ভিতরের তাপ বাহিরে ও বাহিরের তাপ ভিতরে প্রবেশ করতে দেয় না এমন কাঁচ দারা পরিবর্তন করে নিন।
পণ্য নির্বাচনে জ্বালানী সাশ্রয়:
নতুন পণ্য ক্রয়ের সময় এনার্জি রেটিং ও পারফর্মেন্স লেবেল চেক করে নিতে হবে। আপনাকে ক্রয় মূল্য ও পণ্যের সারা জীবনের সাশ্রয়-কৃত এনার্জির মূল্য তুলনা করতে হবে।
গুনগত মান বিবেচনা করে পণ্য নির্বাচন করতে হবে- আপনার ফ্রিজারের দরজা ভালভাবে লাগে কিনা দেখতে হবে, ঠান্ডার পরিমাণ নির্ধারণের চাবি যথাস্থানে আছে কিনা দেখতে হবে, বরফ জমে কোন লাইন বন্ধ যয়ে যায় কিনা দেখতে হবে, কারণ এসবের উপর নির্ভর করছে আপনার ফ্রিজারের পারফর্মেন্স।
ডিস ওয়াশার ও লন্ড্রি-মেশিন ব্যবহারের জন্য অনেকগুলো আইটেম একত্রে ব্যবহার করুন এবং ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করুন।
প্রতিদিনের কাজেই এনার্জি সেভিং এর বিষয়টি স্মরণ রাখতে হবে- কম্পিউটার বা ল্যাপটপে পাওয়ার সেভিং ফিচার ব্যবহার করতে হবে, স্ক্রিন সেভার না দিয়ে স্ক্রিন বন্ধ রাখুন।
এ্যপ্লায়েন্স বা বিনোদনের সিস্টেমগুলো ব্যবহারের পর সুইচ বন্ধ রাখুন, স্লিপ মুডেও এনার্জি খরচ হয়।
রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা +৫ ডি.সে. ও ফ্রিজারের তাপমাত্রা-১৮ ডি.সে. এ সেট রাখুন। ওভেনের দরজা ভাল করে বন্ধ রাখুন, ওভেন বার বার না চালিয়ে সব খাবার একসাথে রান্না করুন।
আলোর পজিশন রাখুন ভাল:
ইপিশিয়েন্ট ল্যাম্প বা বাতিকে ভালবাসতে শিখতে হবে! CFL সাধারণ বাতির চেয়ে প্রায় ৮০% কম বিদ্যুৎ খরচ করে, টেকেও ১০ গুণ বেশি। মেয়াদ শেষে যেখানে সেখানে না ফেলে যথাযথ ভাবে রি-সাইক্লিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।
যখন ঘরে না থাকবেন বাতি বন্ধ রাখুন।
পুরা ঘরের জন্য বেশি পাওয়ারের বড় আকারের একটি বাতি ব্যবহার না করে কম পাওয়ারের একাধিক বাতি ব্যবহার করুন।
লাইট ফিটিং ও আলো প্রতিফলক নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন এতে কম খরচে বেশি আলো পাবেন।
রাস্তায় জালানি সাশ্রয়:
ক্রয় বা ভাড়া নেয়ার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে কোন গাড়িতে জ্বালানি খরচ কম। সর্বশেষ ও সবচেয়ে বেশি ইফিশিয়েন্ট মডেলের গাড়িটি ক্রয় করুন।
গাড়ি ক্রয়ের সময় দেখতে হবে বেশি ইফিশিয়েন্ট গাড়ির জন্য সরকারী কোন রিবেট বা ভর্তুকির ব্যবস্থা আছে কিনা।
অধিক জালানি খেকো এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহারের পরিবর্তে এয়ার ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করতে পারেন। প্রতিফলন ক্ষমতা সম্পন্ন ওয়িন্ডস্ক্রিন শিল্ড ব্যবহার করতে পারেন যা গাড়ির ভিতরের তাপমাত্রা কম রাখতে সাহায্য করবে।
আপনার গাড়ির টায়ার প্রেশার নিয়মিত পরীক্ষা করুন। এমনকি নির্ধারিত মানের চেয়ে মাত্র ০.৫ বার কমও আপনার জ্বালানি খরচ ২% থেকে ৩% বাড়িয়ে দিতে পারে।
গাড়ির টায়ার ক্রয়ের সময় লেবেল থেকে রুলিং রেজিস্টেন্স দেখে নিন। কম রুলিং-রেজিস্টন্স জ্বলানি খরচ কম ও ঝাকুনিহীন চলতে সহায়ক হবে।
আপনার গাড়ি নিয়মিত সার্ভিসিং করান। সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত ইঞ্জিন লুব্রিকেশন, চাকা ও ব্রেকের পজিশন জ্বালানি খরচ কমাতে সহায়তা করে।
ইকো-ড্রাইভিং জ্বালানি মাইলেজ কমাতে সহায়তা করে। ঘন ঘন এক্সলেরেটর পরিবর্তন না করে একই স্পিডে ও সর্বোচ্চ গিয়ারে চালিয়ে জ্বালানি খরচ কমানো সম্ভব। এমনকি ৩০ সেকেন্ডও যদি অপেক্ষা করতে হয় তাহলে ইঞ্জিন বন্ধ করে পুনরায় চালু করা সাশ্রয়ী।
স্বল্প দূরত্বের ক্ষেত্রে গাড়ি ব্যবহার না করে হেঁটে, বাইকে, বা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারের অভ্যাস করা যেতে পারে।
কর্মস্থলে জ্বালানি সাশ্রয়:
পুরা অফিস বিল্ডিং ও কোম্পানির জন্য এনার্জি সেভিং প্লান তৈরি করুন।
পুরাতন মটর পরিবর্তনের সময় এনার্জি ইপিশিয়েন্ট ও সঠিক সাইজের মটর ক্রয় করুন, বড় সাইজ সবসময়ই ভাল হবে এমন না। এতে পরিচালন ব্যয় কমবে।
জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য অফিসে কর্মকর্তা কর্মচারিদের মাঝে পুরস্কারের ব্যবস্থা ঘোষণা করতে পারেন।
এমনকি আপনার জ্বালানি সরবরাহকারিওঃ
বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে জেনে নিতে পারেন অধিক ইপিশিয়েন্ট ও এনার্জি সেভিং মিটার সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য।
No comments:
Post a Comment
WAZIPOINT:
Thank you very much to visit and valuable comments on this blog post. Keep in touch for next and new article. Share your friends and well-wisher, share your idea to worldwide.