জি.এম. ফুড কিঃ
জেনেটিক্যাল মডিফাইড (জি.এম.) ফুড এমন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত খাদ্য শস্য যেখানে বায়োটেকনোলজিক্যাল প্রক্রিয়ায় DNA পুনঃস্থাপন বা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে উদ্ভিদ কোষের জিনের পরিবর্ধন সাধন করা হয়। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ভিন্ন জাতের কোষ থেকে জিন সংগ্রহ করা হয় বা বিদ্যমান কোষকে পুনঃবিন্ন্যাস করা হয় এবং পরিবর্তিত নতুন কোষের বৈশিষ্ট মূল কোষের বৈশিষ্ট থেকে সর্ম্পূন ভিন্ন হয়ে থাকে। উদাহরণ স্বরূপ- জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে প্রাপ্ত দেরিতে পাঁকানো টমেটো; পোকা-মাকড় দমন ক্ষমতা সম্পন্ন খাদ্য শস্য যেমন: ভাইরাস প্রতিরোধক স্কোয়াস, কলোরডো আলু এবং পোকা নিরোধ আলু; আগাছা প্রতিরোধক শস্য যেমন: বিশেষ ধরনের তুলা ও সয়াবিনসহ বিভিন্ন ধরনের শস্য। সেই ১৯৮৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বীজ উৎপাদনকারীরা ১১,৬০০ এরও বেশী বীজ মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ USDA APHIS (United States Department of Agriculture Animal and Plant Health Inspection Service) এ আবেদন করেছেন, যার শতকরা ৯২ ভগেরও বেশী আবেদন অনুমোদন করা হয় এর মধ্যে অধিকাংশই প্রধান প্রধান খাদ্য শস্যের। উল্লেখযোগ্য ভুট্টা, সয়াবিন, আলু, ও তুলা ইত্যাদি। এছাড়াও ৬,৬০০ এরও বেশী আবেদন আগাছা ও পোকা-মাকড় প্রতিরোধক বিষয়ক জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং সংশ্লিষ্ট। খাদ্য মজুদ ও পুষ্টিমান বাড়ানোর জন্য জি.এম. ফুড ভবিশ্যতে খাদ্য উৎপাদনকারীদের একমাত্র সহায়ক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
Animation of the structure of a section of DNA. The bases lie horizontally between the two spiraling strands. (Photo credit: Wikipedia) |
সর্ব প্রথম জি.এম. ফুড হিসেবে Flavr SavrTM
নামে এক ধরনের টমেটো বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করা হয় যার বৈশিষ্ট হলো পেঁকে যাওয়ার পরও এর
কোষপ্রাচীর ভেঙ্গে যায় না ফলে দীর্ঘ সময় পরিবহন ও সংরক্ষনে এটা তরতাজা থাকে।
অন্যদিকে শক্ত চিজ তৈরীর জন্য এক ধরনের জীবাণু ব্যবহার করা হয় যা সাধারনত বাছুরের
পাকস্থলি থেকে সংগ্রহ করা হতো; বর্তমানে জি.এম. পদ্ধতিতে বিশেষ ধরনের ফঙ্গাস তৈরী
করা হয়েছে যার সাহায্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ শক্ত চিজ তৈরী করা
হচ্ছে।
জি.এম. ফুডের শ্রণী বিন্ন্যাসঃ
Sponsored:
জি.এম.(GM) কোষ বলতে এমন কোষকে বুঝায় যার জিনকে পরিবর্তন করা হয়েছে। এই পরিবর্তন বিভিন্ন ভাবে হতে পারে, যেমন-জেনেটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (GE) এর মাধ্যমে যেখানে কোষ থেকে জিনকে স্থানান্তর বা অপসারন করা হয়। এই প্রক্রিয়াকে Recombinant DNA বা rDNA পদ্ধতিও বলা হয়। আবার Transgenic পদ্ধতিতে ভিন্ন প্রজাতির কোন কোষ থেকে জিন সংগ্রহ করে তা প্রতিস্থাপন করে নতুন কোষ তৈরী করা হয়। “বিটি কর্ন-Bt corn” (Bacillus thuringiensis) এক ধরনের জি.এম. উদ্ভিদ যা Transgenic পদ্ধতিতে প্রাপ্ত, কারণ এর জিন ব্যাকটেরিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়। প্রথম দিকে Transgenic পদ্ধতি বলতে কোষের এক জিন থেকে অন্য জিনে DNA স্থানান্তর করাকে বুঝাত। কিন্তু এখন Transgenic পদ্ধতি বলতে প্রাণী বা ব্যাকটেরিয়া থেকে DNA সংগ্রহ করে উদ্ভিদ কোষে স্থানান্তরকে বুঝায়। জি.এম. পদ্ধতিতে স্ট্রবেরি বা টমেটো উদপাদনের জন্য মাছের দেহ থেকে জিন সংগ্রহ করে তা প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। অবশ্য অনেকেই এ পদ্ধতিকে নৈতিক ভাবে সঠিক নয় বলে মনে করেন এবং এ ধরনের খাদ্য শস্য মানবদেহের জন্য সম্পূর্ন নিরাপদ বলেও মনে করছেন না। এ নিয়ে এখনও বিস্তারিত গবেষনার প্রয়োজন রয়েছে।
জেনারেশন অনুযায়ি জি.এম. ফুডকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
প্রথম জেনারেশন: এ জেনারেশনে প্রচলিত খাদ্য শস্যের উন্নত জাত তৈরী করা হয়,
যেমন-আগাছা প্রতিরোধক, পোকামাকড় প্রতিরোধক, বৈরি আবহাওয়া প্রতিরোধক ইত্যাদি।
দ্বিতীয় জেনারেশনঃ এ জেনারেশনের শস্যে কিছু খাদ্য গুনাগুন সংযুক্ত করা হয়, যেমন- গবাদি
পশুর খাদ্যের পুষ্টিমান বাড়ানো হয়।
তৃতিয় জেনারেশনঃ এ জেনারেশনে ফর্মাসিউটিক্যাল, জৈব-জ্বালানী ও খাদ্য চাহিদা মেটানোর
জন্য কাজ করা হয়।
জি.এম. ফুড ভোক্তাদের কি ভাবে সহায়তা করতে পারেঃ
বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে দেখা যায় উন্নত বিশ্বের শিল্প কারখনা প্রচুর
জি.এম. ফুড উৎপাদনের পক্ষে, কারণ অতিরিক্ত
রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার কম হওয়াতে জি.এম. ফুডের উৎপাদন খরচ
অনেক কম। মুলত উৎপাদনের যেকোন সাশ্রয়ের সুবিধাই ভোক্তা পেয়ে থাকেন। জি.এম.
পদ্ধতিতে উৎপাদিত খাদ্যে পুষ্টিমান
সংযোজনও ভোক্তার জন্য একধরনের বাড়তি সুবিধা- "Golden Rice" যার চালের মধ্যে
ভিটামিন-এ ও লৌহের প্রধান উৎস বেটাক্যারটিন রয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভিটামিন-এ
ও লৌহজাত খাদ্যের অভাবে অন্ধ-শিশু ও মাতৃ-মৃত্যুর হার অধিক বেশি দেখা যায়। এসব
দেশে "Golden Rice" কে প্রধান খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে শিশুর অন্ধত্ব ও মাতৃ-মৃত্যুর হার
অধিকংশে কমানো সম্ভব। অনেক অনুন্নত, দরিদ্র ও জনবহুল দেশে প্রতি বছর খাদ্যাভাবে
অনেক লোক মারা যাচ্ছে। জি.এম. পদ্ধতিতে অধিক খাদ্য উৎপাদন করে এসব খাদ্যের চাহিদা
পূরণ করা সহজ।
জি.এম ফুড কতটা স্বাস্থসম্বতঃ
Sponsored:
অধিকাংশ স্বাস্থ ও পুষ্টিবিদরাই জি.এম. ফুডের এলার্জিক প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে একমত। দুধ, ডিম, গম, মাছ, বাদাম, সয়াবিন, খোলসযুক্ত মাছ ইত্যাদি খাদ্যের বিশেষ ধরনের প্রোটিন ৯০% এরও বেশি ফুড এলার্জির কারণ। সুতরাং সাধারনত যেসব খাদ্যে এধরনের প্রোটিন নাই সেসব খাদ্যে যদি এধরনের খাদ্য থেকে প্রোটিন সংগ্রহ করে প্রতিস্থাপন করা হয়, তাহলে যেসকল লোক এধরনের প্রোটিনের জন্য ফুড এলার্জিক তারা না জেনে এসব খাদ্য গ্রহণ করে ফুড এলার্জিতে ভোগবে। এর প্রতিকারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের FDA (Food and Drug Authority) বিধান করেছে যে, প্রত্যেক জি.এম. ফুড প্রস্তুতকারীকে এ সত্য মেন চলতে হবে যে তাদের উৎপাদিত পন্যে এলার্জিক কোন উপাদান সয়যোজন করা হয় নাই। যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে উৎপাদিত পন্যের গায়ে ভোক্তাকে সতর্ককারী স্টীকার সংযুক্ত করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে কি জি.এম. ফুড বিক্রি হয়ঃ
ধারনা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বাজারে ৬০% থেকে ৭০%
খাদ্যে জি.এম. উপাদান বিদ্যমান। যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৮ সালে ৪৫ মিলিয়ন একর
জমিতে জি.এম. ফুড উৎপাদন করা হয় যা ১৯৯৭ সালের চেয়ে ২৫০% বেশি। সাধারনত বড় বড় কৃষি
বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো জি.এম. ফুড উৎপাদন করে থাকে যার প্রায় ২৫% ভুট্টার জমি,
৩০% সয়াবিনের জমি এবং ৪৫% তুলার জমি। ১৯৯৮ সালে সারাবিশ্বে ৬৯ মিলিয়ন একর জমিতে
জি.এম. ফুড চাষ করা হয় যার মাত্র ১৫% জমি উন্নয়নশীল দেশের।
২০০০ সালে মিডিয়াতে জি.এম. সলমন সম্পর্কে অনেক সংবাদ প্রচারিত হয়।
এধরনের মাছ সাধারন সলমনের চেয়ে আকারে দ্বিগুন হয় এবং দশগুন পর্যন্ত তাড়াতাড়ি
বৃদ্ধি পায়, যদিও ১০% থেকে ২৫% কম খাবার খায়। এসব সলমন উৎপাদনকারীরা দাবি করছে যে
তাদের উৎপাদিত মাছ জীবানুমূক্ত এবং সাধরন পরিবেশে বংশবৃদ্ধি করতে পারে না।
ফ্লেভর
সেভর (The Flavr SavrTM) টমেটোঃ
প্রথম বানিজ্যিক ভাবে বিক্রয়ের জন্য অনুমোদন পায় জি.এম. পদ্ধতিতে
উৎপাদিত ফ্লেভর সেভর টমেটো। Calgene নামে একটি কোম্পানি এটি প্রথম উৎপাদন করে যা যুক্তরাষ্ট্রের FDA ১৯৯৩ সালে অনুমোদন
করে। অনুমোদনের এক বছর পরেই বাজারজাত শুরু হলেও জনগনের ব্যপক আপত্তি ও বিশেষ ধরনের
পরিবহন ব্যবস্থার স্বল্পতার কারণে ১৯৯৭ সালে এর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। উক্ত
কোম্পানি নাম পরিবর্তন করে Monsanto নামে নতুন ভাবে বাজারযাত করতে শুরু করে যা তে পরিবহনের সমস্যা
পরিহার করা সম্ভব হয়। কিন্তু এ ধরনের জি.এম. ফুড নিয়ে সৃস্ট বিতর্ক এখনো চলছে।
বিটি (Bacillus
thuringiensis) কর্নঃ
এটা এমন পদ্ধতি যার সাহায্যে ফসলের পোকা-মাকড় প্রতিরো ক্ষমতা বৃদ্ধি
করা হয়। জি.এম. পদ্ধতির ইউরোপিয়ান ভু্ট্টা নিজেকে আভ্যন্তরিন পোকা ও পঙ্গপালের হাত
থেকে রক্ষা করতে সক্ষম। অপরদিকে এর উৎপাদন খরচও কম। মানুষের খাদ্য হিসেবে
বানিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের জন্য বিটি কর্ন ১৯৯৫ সালে EPA ও USDA থেকে অনুমোদন পায়।
অতি অল্প সময়ে বিটি কর্নের ব্যবহার নাটকীয় ভাবে বৃদ্ধি পায়, ১৯৯৬ সালে যেখানে এর
ব্যবহার ছিল মাত্র ১.৪% সেখানে ১৯৯৯ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৩০% যার জমির পরিমান
প্রায় ২৬ মিলিয়ন একর।
ষ্টারলিংক কর্নঃ
ষ্টারলিংক কর্ন হলো কম্পানী ট্রেডমার্ক, নিজেরা পোকা দমনকারী বিশেষ
ধরনের প্রোটিন Cry9C ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের জি.এম. ভুট্টা উৎপাদন করে। অভিযোগ পাওয়া
যায় যে Cry9C প্রোটিনে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক এলার্জি রয়েছে। পরবর্তীতে ১৯৯৮
সালে EPA (Environmental Protection
Agency) কর্তৃক এর সত্যতা পাওয়া যায় এবং
ষ্টারলিংকে শুধুমাত্র পশুখাদ্য ও মানব খাদ্য ছাড়া অন্যান্য কাজে ব্যবহারের অনুমোদন
দেয়া হয়। অবশ্য ২০০০ সালে কিছু পরিবর্তিত রূপে স্টারলিংক মানব খাদ্য হিসেবে
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ছাড়া হয়।
এল-ট্রাইপতোফান (L-Tryptophan):
এল-ট্রাইপতোফানই সর্বপ্রথম জি.এম. ফুডের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে অধিক
সতর্ক হওয়ার প্রয়োজনিয়তার কথা স্বরন করিয়ে দেয়। ১৯৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৭ জন
জি.এম. ফুডের EMS (Eosinophilia Myalgia Syndrome) বিষক্রিয়ায় মারা যায়। এসব
খাবার প্রক্রিয়াতে জি.এম. ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু FDA মনে করে
এদূর্ঘটনা জি.এম. পদ্ধতির জন্য নয়, বরং
খাদ্য বিশুদ্ধ করন প্রক্রিয়ার কোন এক ত্রুটির জন্যই হয়েছিল। অবশ্য এরপর থেকে
সবধরনের খাদ্যের জন্যই উৎস নয় বরং গুনগত মান কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রনের উপর অধিক
প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।
FDA ও EPA কিভাবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেঃ
জন সাধারন FDA এর প্রতি বিশ্বস করে যে তাদের অনুমোদাত খাদ্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর।
গোমাংশ ও পোল্ট্রির নিরাপত্তার দ্বায়িত্ব শুধুমাত্র USDA-এর আর বাকী সব
আভ্যন্তরিন ও আমদানিকৃত খাদ্যের নিরাপত্তা প্রদানের দ্বায়িত্ব FDA পালন করে থাকে।
প্রাথমিক ভাবে EPA পোকা-মাকড় দমনের মান নির্ধারন করে থাকে এবং EPA কর্তৃক নির্ধারিত
মান খাদ্যের জন্য যথাযথ ভাবে পালিত হচ্ছে কিনা FDA তা পর্যবেক্ষন করে থাকে। USDA-APHIS সার্বিক ভাবে মাঠ পর্যায়ে জি.এম. শস্যের উপর নিয়ন্ত্রন ও পর্যবেক্ষণ
করে থাকে।
জি.এম. ফুডের ভবিশ্যতঃ
জি.এম. ফুড নিয়ে বরাবরই অনেক দ্বিমত রয়েগেছে। কিন্তু গবেষকরা খাদ্য
শস্য উৎপাদনের নতুন নতুন পদ্ধতি বেরকরার চেস্টা করে যাচ্ছে। বিশেষ করে ইউরোপের
বিজ্ঞানীরা প্রচলিত জিন ও পারমানবিক জীববিদ্যা সংক্রান্ত নতুন এক পদ্ধতি MAS (Marker-Assisted Selection) নিয়ে কাজ করছে যার
সাহায্যে রং, মাংশের গুনগতমান, পরিপাক পদ্ধতি নিয়ন্ত্রনকারী জিনকে নিয়ন্ত্রন করে
জি.এম. ফুড উৎপাদন করা হবে। এই পদ্ধতির
প্রতিশ্রুত বিষয় হলো Transgenic DNA ব্যবহার না করে বিদ্যমান DNA ব্যবহার করা হবে,
ফলে জি.এম. ফুড সংক্রান্ত দ্বিমত অনেকটাই কমে যাবে।
References
No comments:
Post a Comment
WAZIPOINT:
Thank you very much to visit and valuable comments on this blog post. Keep in touch for next and new article. Share your friends and well-wisher, share your idea to worldwide.